নিরেন দাস,জয়পুুরহাট প্রতিনিধিঃ মাস ছয়েক আগে রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া

মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে যোগ দান করেন মো:মাজহারুল ইসলাম। যোগদানের পর থেকেই ওসি মাজহারুলের বিভিন্ন কার্যক্রম,কথা ও আচরণ নিয়ে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। তার প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকা-অব্যাহত থাকলে আগামীতে পুলিশের ইমেজ ক্ষুন্ন হতে পারে বলেও কেউ কেউ আশংকা করছেন।

তাই বিষয়টি প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে খতিয়ে দেখার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এরআগে মাজহারুল ইসলাম নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

জানা গেছে, মাস কয়েক আগে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি’র গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও ম্যানেজারকে আহতের ঘটনায় অভিযোগ দেওয়া হলেও অজ্ঞাত কারণে তা মামলা হিসেবে রেকর্ড করেননি বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম।

এ নিয়ে ভুক্তভোগীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ভুক্তভোগী মেসার্স হিরা এন্টারপ্রাইজের মালিক আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে রানা জানান,

গত ১৪ এপ্রিল সকাল ৯ টায় বোয়ালিয়া থানাধীন কয়েরদাঁড়া এলাকায় ১৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের চেম্বারের পাশে টিসিবির মালামাল বিক্রি করছিলেন তাদের নিয়োগকৃত কর্মচারীরা।

এদিন বিকেল ৩টায় কয়েরদাড়া ও মালদা কলোনী এলাকার মোঃ রফিক ডিলারের ছেলে মোঃ শহিদুল (৪০) ও অজ্ঞাতনামা আরো ৪ জন যুবক টিসিবি পণ্যের ট্রাকের কাছে আসেন এবং কার্ড ছাড়াই টিসিবির মালামাল চান।

এসময় কর্মচারীরা কার্ড ছাড়া পণ্য দিতে না চাইলে তারা ম্যানেজারসহ অন্য ৩ জন কর্মচারীকে চেয়ার ও ইট দিয়ে মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছিলা ফোলা জখম করেন।

হামলাকারীদের আঘাতে ম্যানেজার গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৪নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। একই সময় গাড়ীতে একটি কার্টুনে থাকা কয়েক হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন হামলাকারীরা।

তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে ঘটনার দিন বিকেলেই হিরা এণ্টারপ্রাইজের ম্যানেজার সারোয়ার জাহান বাদি হয়ে নগরী বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু ওসি অভিযোগ নেননি। দুই সপ্তাহ ঘুরিয়েছেন।

এরপর অভিযোগ নিলেও বিষয়টি ডাইরিভুক্ত করা হয়েছে কিনা বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বাদী নিজেও বিষয়টি জানতে পারেননি বলে জানিয়েছেন।

এদিকে, শিক্ষা নগরী খ্যাত রাজশাহী নগরীতে বেশ কিছু আবাসিক হোটেলে দীর্ঘদিন ধরে অসামাজিক কার্যকলাপ চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিষয়টি নিয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মাজহারুল জানার পরেও সংশ্লিষ্ট হোটেলগুলোর বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ নিয়ে অভিজ্ঞ মহল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অবিলম্বে পুলিশ প্রশাসনকে অভিযুক্ত হোটেল ও দোষিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

তা না হলে এখানকার পরিবেশ কলুষিত হবে। ওসি মাজহারুলের বিরুদ্ধে আরেকটি গুরুতর অভিযোগ হলো- তিনি প্রায়ই রাজশাহীর সাংবাদিকদের সাথে অপেশাদারসুলভ ও খারাপ আচরণ করেন।

এরই মধ্যে তিনি বেশ কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিক ও সাংবাদিক নেতার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। কোনো ঘটনার বিষয়ে তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি অপ্রাসঙ্গিকভাবে অযৌক্তিক বিষয়ের অবতারণা করেন। পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন।

এতে করে পেশাদার সিনিয়র সাংবাদিকগণ বিব্রত হন। এছাড়া বোয়ালিয়া মডেল থানার পাচানি মাঠ, পঞ্চবটি, খরবোনা, হাদির মোড়, তালাইমারী এলাকায় মাদকের ব্যাপক বিস্তার ঘটলেও তা রোধে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনো তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানতে চাইলে আরএমপি’র মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) মোঃ রফিকুল আলম জানান, আমি অনেকদিন ধরে ঢাকায় ট্রেনিংয়ে আছি। বর্তমান অবস্থা জানিনা। সপ্তাহখানেক পরে ফিরব।

তখন জানাতে পারব। টিসিবির ম্যানেজারের ওপর হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় অভিযোগ না নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি মাজহারুল ইসলাম বিষয়টি আমার এখন মনে নেই বলেই কথা শেষ করেন তিনি।